সালোকসংশ্লেষ কাকে বলে – সালোকসংশ্লেষের স্থান – রঞ্জক
Important Facts about Photosynthesis
সালোকসংশ্লেষ কাকে বলে – সালোকসংশ্লেষের স্থান – রঞ্জক
প্রিয় পাঠকেরা, আজকে আমরা আলোচনা করতে চলেছি সালোকসংশ্লেষ (Photosynthesis ) সম্পর্কিত কিছু তথ্য। সালোকসংশ্লেষ কাকে বলে – সালোকসংশ্লেষের স্থান – রঞ্জক ।
সালোকসংশ্লেষ কাকে বলে ?
যে জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সবুজ উদ্ভিদ কোষে সূর্যালোক ও ক্লোরোফিলের উপস্থিতিতে, মূল দ্বারা শোষিত জল ও পরিবেশ থেকে গৃহীত কার্বন ডাই-অক্সাইডের রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে শর্করাজাতীয় খাদ্যের সংশ্লেষ ঘটে করে এবং গৃহীত কার্বন ডাইঅক্সাইডের সমপরিমাণ অক্সিজেন প্রকৃতিতে নির্গত হয়, তাকে সালোকসংশ্লেষ বলে।
সালোকসংশ্লেষ প্রধানত উদ্ভিদের পাতায় সংঘটিত হয় কেন?
- উদ্ভিদের পাতা চ্যাপ্টা ও প্রসারিত হওয়ায় বেশি পরিমানে সূর্যালোক পায়।
- সবুজ উদ্ভিদের পাতায় ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে।
- উদ্ভিদের পাতায় অবস্থিত অসংখ্য পত্ররন্ধ্র পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করতে উদ্ভিদকে সহায়তা করে।
রাতে সালোকসংশ্লেষ হয় না কেন?
সালোকসংশ্লেষের প্রধান উপকরণ কার্বন ডাই-অক্সাইড,জল, সূর্যালোক ও ক্লোরোফিল। এদের কোনো একটির অনুপস্থিতিতে উদ্ভিদদেহে সালোকসংশ্লেষ ঘটে না। রাতের বেলা আলোর অনুপস্থিতিতে সালোকসংশ্লেষ সম্ভব নয়। তাই রাতে সালোকসংশ্লেষ হয় না।
সালোকসংশ্লেষ সম্পর্কিত কিছু তথ্য :
১. সালোকসংশ্লেষের প্রধান অঙ্গ ➟ পাতা
২. সালোকসংশ্লেষের প্রথান স্থান ➟ মেসোফিল কলা
৩. সালোকসংশ্লেষের অঙ্গাণু ➟ ক্লোরোপ্লাস্ট
৪. সালোকসংশ্লেষের আলোক বিক্রিয়ার ঘটনাস্থল ➟ ক্লোরোপ্লাস্টের গ্রানা
৫. সালোকসংশ্লেষের অন্ধকার বিক্রিয়ার ঘটনাস্থল ➟ ক্লোরোপ্লাস্টের স্ট্রোমা
৬. সালোকসংশ্লেষকারী একক ➟ কোয়ান্টোজম
৭. সালোকসংশ্লেষকারী রঞ্জক ➟ ক্লোরোফিল
৮. সালোকসংশ্লেষে সক্ষম প্রাণী ➟ ক্রাইস্য়ামিবা, ইউগ্লিনা
৯. সালোকসংশ্লেষে অক্ষম উদ্ভিদ ➟ সমস্ত রকম ছত্রাক, স্বর্ণলতা
১০. সালোকসংশ্লেষে সক্ষম ব্যাকটিরিয়া ➟ রোডোসিউডোমোনাস, রোডোস্পাইরাম
১১. সবচেয়ে বেশি সালোকসংশ্লেষ হয় ➟ ক্লোরেল্লা নামক সামুদ্রিক শৈবালে
১২. যে বর্ণের আলোয় সালোকসংশ্লেষ সবথেকে ভালো হয় ➟ লাল ও নীল বর্ণে
১৩. সূর্যালোকের যে তরঙ্গদৈর্ঘ্যতে সালোকসংশ্লেষ ভালো হয় ➟ ৪০০ nm থেকে ৭০০ nm
উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষের স্থান
উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষের স্থান নিচে দেওয়া রইলো ।
মূল | গুলঞ্চ, অর্কিড |
---|---|
কান্ড | পুঁই, ফণিমনসা |
পাতা | সবুজ পাতা |
বৃতি | ফুলের সবুজ বৃতি |
দল | আতা, কাঁঠালিচাঁপার সবুজ দল |
ত্বক | কাঁচা ফলের ত্বক |
- সালোকসংশ্লেষ আলোক দশা ও অন্ধকার দশা – এই দুটি দশায় সম্পন্ন হয় |
- বিজ্ঞানী রবিন হিল আলোক দশা প্রথম পর্যবেক্ষণ করেন বলে একে হিল বিক্রিয়া বলে |
- বিজ্ঞানী ব্লাকম্যান অন্ধকার দশা প্রথম পর্যবেক্ষণ করেন বলে একে ব্লাকম্যান বিক্রিয়া বলে |
- অন্ধকার বিক্রিয়ার জন্য শক্তি ATP থেকে সরবরাহ হয় |
- জীবকোষে একমাত্র ATP অনুর মধ্যেই শক্তি সঞ্চিত থাকতে পারে বলে ATP কে এনার্জি কারেন্সি বলা হয় |
সালোকসংশ্লেষ পক্রিয়ার রাসায়নিক বিক্রিয়া
6CO2 + 12 H2O = C6H12O6 + 6H20 + 6O2
- ৬ টি কার্বন-ডাই-অক্সাইড এবং ১২ অনু জলের সমন্বয়ে উৎপন্ন হয় ১ অনু গ্লুকোজ , ৬ অনু জল এবং ৬ অনু অক্সিজেন |
- এই পক্রিয়ায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর সম-অনু অক্সিজেন উৎপন্ন হয় |
- প্রতি গ্রাম অনু গ্লুকোজে ৬৮৬ KCal শক্তি আবদ্ধ থাকে |
- সালোকসংশ্লেষ পক্রিয়ার উপজাত পদার্থরূপে উৎপন্ন অক্সিজেনের উৎস হল জল |
আরো দেখে নাও :
সালোকসংশ্লেষ সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর
সালোকসংশ্লেষ কে জারণ বিজারণ প্রক্রিয়া বলে কেন ?
সালােকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় জল জারিত হয়ে অক্সিজেন হয় এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড বিজারিত হয়ে গ্লুকোজ উৎপন্ন হয়। এই পক্রিয়ায় জারণ ও বিজারণ দুটিই একসাথে সম্পন্ন হয়। তাই সালােকসংশ্লেষকে জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়া বলে।
সালোকসংশ্লেষে উৎপন্ন অক্সিজেনের উৎস কি ?
সালোকসংশ্লেষ পক্রিয়ার উপজাত পদার্থরূপে উৎপন্ন অক্সিজেনের উৎস হল জল |
সালােকসংশ্লেষকে অঙ্গার আত্তীকরণ বলে কেন?
সালােকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই-অক্সাইডের কার্বন বা অঙ্গার গ্লুকোজ (C₆H₁₂O₆) গঠনের জন্য ব্যবহৃত হয়। বায়ুমণ্ডলের CO₂ থেকে কোষস্থ যৌগে অঙ্গারের আত্তীকরণকে অঙ্গার আত্তীকরণ বলে। অঙ্গার আত্তীকরণ প্রক্রিয়াটি সালােকসংশ্লেষের সময় ঘটে বলে সালােকসংশ্লেষকে অঙ্গার আত্তীকরণ বলে।
ফটোসিন্থেসিস কাকে বলে?
যে পক্রিয়ায় উদ্ভিদের সবুজ কোষে আলােকের ফোটন কণা গ্রহণ করে আলােক শক্তি রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এবং উৎপন্ন খাদ্যে স্থৈতিক শক্তিরূপে আবদ্ধ হয় তাকে সালােকসংশ্লেষ বা ফটোসিন্থেসিস বলে।
To check our latest Posts - Click Here