বাক্য কাকে বলে? বাক্য কয় প্রকার ও কী কী? PDF Download
বাংলা ব্যাকরণ - বাক্যের সংজ্ঞা ও বিভাগ
বাক্য কাকে বলে? বাক্য কয় প্রকার ও কী কী?
প্রিয় পাঠকেরা, আজকে আমরা আলোচনা করবো বাংলা ব্যাকরণ -এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক, বাক্য কাকে বলে? বাক্য কয় প্রকার ও কী কী? বাক্যের অর্থগত ও শ্রেণীগত প্রকারভেদ নিয়ে আজকের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে । Bakyo kake Bole bakyo koy prokar o ki ki ।
আরও দেখে নাও : Bangla Samas PDF | বাংলা সমাস পিডিএফ – বাংলা ব্যাকরণ
বাক্য কাকে বলে?
আমাদের মনের ভাব বিনিময়ের মাধ্যম হল বাক্য। কতগুলি অর্থপূর্ণ শব্দ পাশপাশি বসে যখন মনের ভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ পায় তখন তাকে বাক্য বলা হয়।
সুবিন্যস্ত পদসমষ্টি দ্বারা যখন কোনো বিষয়ে বক্তার ভাব সম্পূর্ণরূপে প্রকাশিত হয় তখন তাকে বাক্য বলা হয়।
উদাহরণ :
- আমার বাংলা কুইজের নোটস পড়তে ভালো লাগে ।
- আমি রোজ বিদ্যালয়ে যায়।
- আমার আম খেতে ভালো লাগে।
ভাষার বিচারে বাক্যের তিনটি গুন থাকা দরকার – (১) যোগ্যতা, (২) আকাঙ্খা, (৩) আসক্তি বা নৈকট্য।
যোগ্যতা : একাধিক শব্দ শুধুমাত্র পাশাপাশি বসালেই বাক্য হয় না। অর্থের বাস্তবতাকেও বজায় রাখতে হয়। অর্থের এই বাস্তবতাকেই বাক্য বলা হয়।
যেমন – সূর্য রাত্রিতে দেখা যায়। এই বাক্যটিতে গঠনগত কোনো ভুল না থাকলেও, বাক্যটির বাস্তবের অর্থ ঠিক নয় কারণ সূর্যকে রাত্রিতে দেখা যায় না। অতএব বাক্যটির যোগ্যতা নেই।
আকাঙ্খা : আমরা যখন কোন বাক্য গঠন করি বা পড়ি , কিছুটা পড়ার পর একটা জিজ্ঞাসা তৈরী হয়, তাকেই আকাক্ষা বলে,।
যেমন- আমি বাড়িতে বসেই- , এতটুকু বলার পর একটা কৌতূহল তৈরী হয় , তারপর কী? বাক্যের এই কৌতূহল সৃষ্টির ক্ষমতাই হল ‘আকাক্ষা’ তারপর আকাঙ্ক্ষা নিরসনের ক্ষমতা বাক্যের থাকতে হবে অর্থাৎ বাক্যটিকে সম্পূর্ণ করতে হবে- আমি বাড়িতে বসেই পড়াশােনা করব। বাক্যের অর্থগত চাহিদাপূরণের ক্ষমতাকেই আকাঙ্ক্ষা বলে।
আসক্তি বা নৈকট্য : পদগুলিকে এলােমেলােভাবে সাজালে বাক্য হয় না। পদগুলিকে সঠিকস্থানে বসাতে হয়। তবেই অর্থ
বােধগম্য হয়। অর্থানুযায়ী পদগুলিকে সঠিকভাবে সাজানােকেই বলা হয় আসক্তি বা নৈকট্য।
যেমন- করছে ছাত্রছাত্রীরা বসেই পড়াশােনা বাড়িতে– এই বাক্যটির অর্থ বােধগম্য নয় কারন পদগুলিকে ঠিকঠাক সাজানাে হয় নি। আসলে বাক্যটির আসক্তি বা নৈকট্যের অভাব বর্তমান। বাক্যটি ঠিকঠাক সাজালে হয়- ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে বসেই পড়াশােনা
করছে।
আরও দেখে নাও : সন্ধি-বিচ্ছেদ – স্বরসন্ধি – Sandhi Viched in Bengali
বাক্যের অংশ
বাক্যের মূলত দুটি অংশ বা ভাগ রয়েছে । – উদ্দেশ্য ও বিধেয় ।
উদ্দেশ্য : বাক্যে জেক উদ্দেশ্য করে কিছু বলা হয়ে থাকে তাকে উদ্দেশ্য বলা হয়।
বিধেয় : উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা বলা হয় তাই বিধেয়।
পাখি আকাশে ওড়ে ।
এই বাক্যটিতে ‘পাখি’ উদ্দেশ্য ও ‘আকাশে ওড়ে’ বিধেয়।
বাক্যের গঠনগত শ্রেণীবিভাগ
উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে লক্ষ্যরেখে বাংলা বাক্যের গঠনকে বিশ্লেষণ করে গঠনগত ভাবে বাংলা বাক্যকে প্রধানত তিনটি
শ্রেণীতে ভাগ করা হয়-
- ১. সরলবাক্য
- ২. যৌগিকবাক্য
- ৩. জটিলবাক্য
আরও দেখে নাও : Bengali Bagdhara PDF Download । বাংলা বাগধারা – PDF
সরলবাক্য
একটিমাত্র কর্তা (উদ্দেশ্য) এবং একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া (বিধেয়) নিয়ে গঠিত বাক্যকে সরল বাক্য বলা হয়।
যেমন- ছাত্ররা লেখাপড়া করছে। এখানে একটি কর্তা- ছাত্ররা, এবং ক্রিয়া একটি- করছে।
যৌগিক বাক্য
একের বেশী প্রধান উপবাক্য (বা খন্ড বাক্য ) সংযােগে গঠিত, কোনাে সংযােজক অব্যয় দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি সম্পূর্ণ বাক্য তৈরি করে, তখন তাকে যৌগিক বাক্য বলে।
যেমন- তিনি পন্ডিত কিন্তু তিনি সাধাসিধে। এখানে দুটি সরলবাক্য বা উপবাক্য আছে- ‘তিনি পন্ডিত এবং ‘ তিনি সাধাসিধে। এই বাক্য দুটিকে একটি সংযােগক দ্বারা কিন্তু যুক্ত করা হয়েছে।
জটিল বাক্য
একটি প্রধান বাক্যাংশ এবং এক বা একাধিক অপ্রধান বাক্যাংশ নিয়ে গঠিত বাক্যকে মিশ্র বাক্য বা জটিল বাক্য বলা হয়।
যেমন- যদি বিনয় পাশকরে তাহলে সে পুরস্কার পাবে ।এখানে ‘ সে পুরস্কার পাবে’ মূল বক্তব্য বা প্রধান বাক্য, আর শর্তাধীন বাক্য বা অপ্রধান বাক্য হল- ‘যদি বিনয় পাশ করে‘।
সরল বাক্য থেকে জটিল বাক্যে রূপান্তর
সরল বাক্যকে মিশ্র বা জটিল বাক্যে রূপান্তর করতে হলে সরল বাক্যের কোনাে অংশকে খণ্ড বাক্যে পরিণত করতে হয় ও
উভয়ের সংযােগের জন্য সম্বন্ধসূচক পদের সাহায্যে (যেমন-তবে, যে, সে) পরস্পর সাপেক্ষ করতে হয়। যেমন –
সরল বাক্য | জটিল বাক্য |
---|---|
ভিক্ষুককে দান কর। | যে ভিক্ষা চায় তাকে দান কর। |
তিনি দরিদ্র হলেও লােভী নন। | যদিও তিনি দরিদ্র, তবুও লােভী নন। |
গুণবান ব্যক্তি বিনয়ী হন। | যার গুণ আছে তিনি বিনয়ী। |
মিশ্র বা জটিল বাক্যকে সরল বাক্যে রূপান্তর
মিশ্র বাক্যেকে সরল বাক্যে পরিবর্তন করতে হলে মিশ্র বাক্যের প্রধান খণ্ড বাক্যটিকে সঙ্কুচিত করে একটি পদ বা একটি বাক্যাংশে পরিণত করতে হয়। যেমন-
জটিল বাক্য | সরল বাক্য |
---|---|
যারা মূর্খ তারা পশুর সমান। | মুর্খলোক পশুর সমান। |
যে রক্ষক, সেই ভক্ষক। | রক্ষকই ভক্ষক। |
যতদিন জীবন থাকবে, মিথ্যাকথা বলব না। | আজীবন মিথ্যা কথা বলব না। |
বাক্যের অর্থগত শ্রেণীবিভাগ
অর্থগত ভাবে বা বর্ণনাগত ভাবে বাক্যকে ৭টি ভাগে ভাগ করা হয়।
- নির্দেশক বাক্য
- প্রশ্নবাচক বাক্য
- অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
- প্রার্থনা সূচক বাক্য
- সন্দেহসূচক বাক্য
- আবেগসূচক বাক্য
- শর্তসাপেক্ষ বাক্য
নির্দেশক বাক্য
যে বাক্যে কোন বক্তব্য বা তথ্য বা বিবৃতি প্রকাশ করা হয় তাকে নির্দেশক বাক্য বলে। যেমন – আমরা গ্রামে বাস করি।
নির্দেশক বাক্য আবার দুই প্রকারের- ক) ইতিবাচক/হ্যাঁবাচক/অস্তৰ্থক বাক্য খ) নেতিবাচক/না-
বাচক/ নঞর্থক বাক্য
ক) ইতিবাচক/হ্যাঁবাচক/অস্তৰ্থক বাক্য– যে বাক্যে অর্থকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় বা স্বীকার করা হয়
তাকে ইতিবাচক বাক্য বলে। যেমন- আমি গান গাই।
খ) নেতিবাচক/না-বাচক/ নঞর্থক বাক্য– যে বাক্যে অর্থ না অর্থে প্রকাশ করা হয় তাকে নেতিবাচক
বাক্য বলে। যেমন- আমি গান গাই না।
প্রশ্নসূচক বাক্য
যে বাক্যে কোন প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা প্রকাশিত হয়, তাকে প্রশ্নসূচক বাক্য বলে। যেমন- তুমি কোথায় আছাে?
অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
যে বাক্যে আদেশ, অনুরােধ, উপরােধ ইত্যাদি প্রকাশ করা হয় তাকে অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলে। যেমন- বাড়িতে পড়তে বসাে।
প্রার্থনাসূচক বাক্য
যে বাক্যে মনের ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা প্রার্থনা ইত্যাদি প্রকাশ পায় তাকে প্রার্থনাসূচক বাক্য বলে। যেমন-হে স্রষ্টা আমাদের রােগমুক্তি দাও।
বিস্ময়সূচক বাক্য
যে বাক্যে আশ্চর্য হওয়ার অনুভূতি প্রকাশিত হয়, তাকে বিস্ময়সূচক বাক্য বলে। যেমন- কী ভীষণ পরিস্থিতি!
আবেগসূচক বাক্য
যে-বাক্যে আনন্দ, শোক, ক্রোধ, ঘৃণা, বিরক্তি, বিস্ময়, উৎসাহ ইত্যাদি কোনো একটি আবেগ প্রকাশিত হয়, তাকেই বলে আবেগসূচক বাক্য। যেমন – ছিঃ তুমি এমন কাজ করবে আমি ভাবতেও পারিনি ।
শর্তসাপেক্ষ বাক্য
যে-বাক্যে বর্ণিত একটা ঘটনা বা অবস্থার উপর অন্য্ একটি ঘটনা বা অবস্থার নির্ভরশীলতা ব্যক্ত হয়, তাকেই শর্তসাপেক্ষ বাক্য বলে। যেমন – যদি বৃষ্টি হয় তাহলে আজ আর যাওয়া হবে না।
Download Section
- File Name : বাক্য কাকে বলে_ বাক্য কয় প্রকার ও কী কী_ – বাংলা কুইজ
- File Size : 2.8 MB
- No. of Pages : 06
- Format : PDF
- Language : Bengali
- Subject : Bengali Grammar
To check our latest Posts - Click Here