Notes

ফুসফুসের গঠন ও কাজ – Anatomy and Function of Lungs

Anatomy and Function of Lungs

ফুসফুসের গঠন ও কাজ

আজ আমরা জেনে নেবো আমাদের শরীরের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের বিষয়ে কিছু তথ্য। সেই অঙ্গ হল আমাদের প্রধান শ্বাস অঙ্গ ফুসফুস। অনেক প্রানীরই বিভিন্ন ধরণের ফুসফুস দেখা যায়, তবে আমরা কেবল মানুষের ফুসফুস (স্তন্যপায়ী) সম্পর্কে জেনে নেবো আজ। ফুসফুসের গঠন ও কাজ ( Fusfuser Gothon o Kaj ) । Anatomy and Function of Lungs

দেখে নাও : হৃৎপিণ্ডের গঠন ও কার্যপ্রণালী । Heart : Anatomy and Function

ফুসফুস :

ফুসফুস হল মানুষের (স্তন্যপায়ীদের) মূল শ্বাস অঙ্গ, যার মাধ্যমে নিশ্বাস-প্রশ্বাস ক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ফুসফুস একপ্রকারের রক্তজালিকা বা রক্ত ঝিল্লি বিশিষ্ট অঙ্গ যা রক্তে অক্সিজেনের প্রবেশ ঘটায় ও রক্ত থেকে কার্বনডাই অক্সাইডের নির্গমন ঘটায় যা নাসারন্ধ্র দিয়ে দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়। 

  • একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ ব্যক্তি বিশ্রামরত অবস্থায় মিনিটে প্রায় ১২ থেকে ২০ বার নিশ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। 
  • একজন প্রাপ্তবয়স্কের ফুসফুসের ওজন প্রায় ১০০০ গ্রাম এবং আয়তন প্রায় ৬০০০ মি.লি. পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে।

দেখে নাও : প্রাণী ও উদ্ভিদের শ্বাসযন্ত্র তালিকা – List of Respiratory Organs

ফুসফুসের অবস্থান :

মানব দেহে ফুসফুসটি হৃদপিণ্ডের দুপাশ ঘেঁষে বড় খাঁচার ন্যায় অস্থিসমূহ দ্বারা আবৃত বক্ষ-গহ্বরে অবস্থান করে। 

আবরণী :

  • ফুসফুস একধরণের দ্বিস্তরীয় আবরণী কলা প্লুরা দ্বারা আবৃত। 
  • এর ভেতরের স্তর যা ফুসফুসের গায়ে লেগে থাকে তা হল ভিসেরাল প্লুরাস্তর এবং বাইরের স্তরটি হলো প্যারাইটাল প্লুরাস্তর। 
  • এই দুই স্তরের অন্তর্বর্তী অন্তঃ প্লুরাস্তর এক বিশেষ প্রকার তরল দ্বারা পূর্ণ থাকে যা বাইরের আঘাত থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করে। 

ফুসফুসের গঠন :

ফুসফুসের গঠন
  • সুস্থ ফুসফুস সাধারণত হালকা ও নরম স্পঞ্জের মতো ও হালকা লালচে রঙের হয়। 
  • মানুষের ডান ফুসফুস ৩টি খন্ডে বিভক্ত ও বাম ফুসফুসটি ২টি খন্ডে বিভক্ত, তাই ডানদিকের ফুসফুসটি আকারে বামদিকের তুলনায় সামান্য বড়। 
  • এই খণ্ডগুলিকে লোব বলা হয়। 
  • প্রতিটি লোব আবার অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বায়ুথলি দ্বারা গঠিত যা সূক্ষ সূক্ষ শ্বাসনালী ও রক্তনালী দ্বারা যুক্ত থাকে। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বায়ুথলিগুলিকে অ্যালভিওলাস বলে ও একত্রে এদের অ্যালভিওলাই বলা হয়। 

ফুসফুসের কার্যনীতি :

অক্সিজেন শোষণ :

প্রথমত অক্সিজেনযুক্ত বায়ু অ্যালভিওলাসে প্রবেশ করে এই মুহূর্তে সংলগ্ন রক্তজালিকায় অক্সিজেনের চাপ কম থাকায় ব্যাপন প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন অ্যালভিওলাস থেকে রক্তজালিকায় প্রবেশ করে ও এই বিশুধু রক্ত ফুসফুসীয় শিরার মাধ্যমে হৃদপিন্ডে পৌঁছায় এবং সেখান থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে পরে। 

কার্বনডাই অক্সাইড নির্গমন :

অ্যালভিওলাসের অক্সিজেনযুক্ত বায়ু রক্তে শোষিত হওয়ার সাথে সাথেই হৃদপিন্ড থেকে ফুসফুসীয় ধমনীর মাধ্যমে আসা কার্বনডাই অক্সাইড যুক্ত দূষিত বায়ু সংলগ্ন রক্তজালিকার মাধ্যমে অ্যালভিওলাসে বেরিয়ে আসে। রক্তে কার্বনডাই অক্সাইডের ঘনত্ব বেশি বলে ব্যাপন প্রক্রিয়াতেই তা বেরিয়ে আসে ফলে অ্যালভিওলাই ফুলে ওঠে, স্বকভাবিক ভাবেই বেশি চাপ থাকার কারণে সেই বায়ু নাসারন্ধ্র দিয়ে দেহের বাইরে বেরিয়ে আসে। 

এই বায়ু বেরিয়ে এলে ফুসুফুসের অ্যালভিওলাই-তে আবার শুন্যতার সৃষ্টি হয় এবং চাপ কমে যায়।  এই অবস্থায় বাইরের অক্সিজেনের আধিক্যযুক্ত (২১% প্রায়) বায়ু আবার সেই ফাঁকা স্থান পূরণ করতে নাসারন্ধ্র দিয়ে প্রবেশ করে ফুসফুসের অ্যালভিওলাসে। 

আমরা যাকে কার্বনডাই অক্সাইডযুক্ত দূষিত বায়ু বলি তাতে যে অক্সিজেনের পরিমান খুব কম তা না। 

  • যে বায়ু আমরা গ্রহণ করি তাতে অক্সিজেন – ২১%, কার্বনডাই অক্সাইড – ০.০৩% ও নাইট্রোজেন – ৭৯% থাকে। 
  • এবং যে বায়ু আমরা ত্যাগ করি তাতে অক্সিজেন – ১৬%, কার্বনডাই অক্সাইড – ৪% এবং নাইট্রোজেন – ৭৯% থাকে। 

ফুসফুসের রোগসমূহ :

  • এজমা বা হাঁপানি রোগ। 
  • ব্রঙ্কাইটিস। 
  • ফুসফুসের ক্যান্সার। 
  • নিউমোনিয়া। 
  • এমফাইসিমা। 
  • টিউবারকিউলোসিস। 
  • নিউমোকনিওসিস ইত্যাদি। 

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Related Articles

Back to top button