NotesGeneral Knowledge Notes in Bengali

হৃৎপিণ্ডের গঠন ও কার্যপ্রণালী । Heart : Anatomy and Function

Heart: Anatomy and Function

হৃৎপিণ্ডের গঠন ও কার্যপ্রণালী

আজ আমরা আলোচনা করব মানবদেহের তথা প্রাণীদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হৃৎপিণ্ডের বিষয়ে। হৃৎপিণ্ডের গঠন ও কার্যপ্রণালী

আজকের আলোচনাকে আমরা দুটি পর্যায়ে ভাগ করব। প্রথমেই কিছু প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে, এবং তারপর হৃৎপিণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণের মাধ্যমে।

যদিও মানবদেহের তথা স্তন্যপায়ী প্রাণীর হৃৎপিণ্ডই আমাদের আলোচনার মুখ্য বিষয়, তবুও অন্যান্য কিছু মেরুদণ্ডী প্রাণীর হৃৎপিণ্ডের সম্পর্কেও আমরা সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব আজকে।

আরও দেখে নাও : এক নজরে মানবদেহ । মানবদেহ সম্পর্কিত কিছু তথ্য

হৃদপিন্ড সম্পর্কিত প্রশ্নোত্তর

মানুষের হৃৎপিণ্ডের কয়টি প্রকোষ্ঠ?

চারটি – দুটি অলিন্দ, দুটি নিলয়। প্রসঙ্গতঃ, সমস্ত স্তন্যপায়ীর হৃৎপিণ্ডের চারটি প্রকোষ্ঠ। 

ব্যাঙের হৃৎপিণ্ডের কয়টি প্রকোষ্ঠ?

ব্যাঙ তথা উভচর জীবের হৃৎপিণ্ডের তিনটি প্রকোষ্ঠ – দুটি অলিন্দ, একটি নিলয়।

সরীসৃপ এবং পক্ষীর হৃৎপিণ্ডের কয়টি প্রকোষ্ঠ?

সরীসৃপের (কুমির ব্যতীত) হৃৎপিণ্ডের অসম্পূর্ণ চারটি প্রকোষ্ঠ – দুটি অলিন্দ, একটি অর্ধবিভক্ত নিলয়। কুমির এবং পক্ষীর হৃৎপিণ্ডের চারটি প্রকোষ্ঠ  – দুটি অলিন্দ, দুটি নিলয়। 

মাছের হৃৎপিণ্ডের বৈশিষ্ট্য কী?

মাছের হৃৎপিণ্ডের কেবল দুটি প্রকোষ্ঠ – একটি অলিন্দ এবং একটি নিলয়। মাছের হৃৎপিণ্ডের মধ্য দিয়ে কেবলমাত্র কার্বন ডাইঅক্সাইড সমৃদ্ধ রক্ত প্রবাহিত হয়। 

হৃৎপিণ্ডের আবরণীকে কী বলে?

পেরিকার্ডিয়াম।

মানবদেহে হৃৎপিণ্ডের অবস্থান কোথায়?

বুকের পাঁজরের মধ্যে, সাধারণতঃ বাম দিকে, পঞ্চম এবং অষ্টম থোরাসিক (বক্ষ) কশেরুকার মধ্যবর্তী অঞ্চলে। প্রসঙ্গতঃ, ‘ডেক্সট্রোকার্ডিয়া’ হল যখন হৃৎপিণ্ডের অবস্থান বাম দিকের বদলে ডান দিকে হয়। 

হৃৎপিণ্ডে কী প্রকার পেশী থাকে?

হৃৎপিণ্ডে হৃৎপেশী বা মায়োকার্ডিয়াম থাকে। হৃৎপেশী সরেখ কিন্তু অনৈচ্ছিক পেশী। 

হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন কোন্‌ স্নায়ু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়?

ভেগাস স্নায়ু।

ফোরামেন ওভেল কাকে বলে?

ভ্রূণ অবস্থায় ডান এবং বাম অলিন্দের মধ্যে সংযোগকারী ছিদ্রপথকে ফোরামেন ওভেল বলে। জন্মের অব্যবহিত পরেই এই ছিদ্রপথ বিশেষ শারীরবৃত্তীয় পদ্ধতিতে বন্ধ হয়ে যায়।

হৃৎপিণ্ডের ওজন কত?

মানব হৃৎপিণ্ডের ওজন ২৫০গ্রাম থেকে ৩৫০ গ্রামের মধ্যে হয়।

হৃৎপিণ্ড মিনিটে কতবার স্পন্দিত হয়?

মানব হৃৎপিণ্ডের স্বাভাবিক স্পন্দন মিনিটে ৭২ বার। তবে বয়স, কার্য, এবং অন্যান্য কারণে এই স্পন্দনের হার বিভিন্ন হতে পারে।

সমস্ত চিত্র উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত।

হৃৎপিণ্ডের গঠন

হৃদপিণ্ডের গঠন সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য দেওয়া রইলো ।

হৃৎপিণ্ডের রক্তবাহিকা

হৃৎপিণ্ডের সাথে শরীরের প্রধানতম শিরা ও ধমনীগুলি সংযুক্ত থাকে। এগুলি হল –

ডান অলিন্দের সাথেঃ ঊর্ধ্ব মহাশিরা (Superior Vena Cava) এবং নিম্ন মহাশিরা (Inferior Vena Cava)

বাম অলিন্দের সাথেঃ চারটি ফুসফুসীয় শিরা (Pulmonary veins) – দুইটি বাম ফুসফুস থেকে, দুইটি ডান ফুসফুস থেকে।

ডান নিলয়ের সাথেঃ ফুসফুসীয় মহাধমনী (Pulmonary artery)। এটি পরে দুইভাগে ভাগ হয় – একটি ডান ফুসফুসে এবং অপরটি বাম ফুসফুসে যায়। 

বাম নিলয়ের সাথেঃ মহাধমনী (Aorta)। এটি একটি আর্চ বরাবর শরীরের নিম্নভাগে যায়। 

হৃৎপিণ্ডের রক্তবাহিকা

মানব হৃৎপিণ্ড থেকে মহাধমনী নির্গত হওয়ার পরে তার থেকে তিনটি প্রধান শাখা বের হয়। সেগুলি হল –

  • ব্র্যাকিওসেফালিক ধমনী
  • বাম কমন ক্যারোটিড ধমনী
  • বাম সাবক্লেভিয়ান ধমনী

মানব সংবহন তন্ত্র একটি জটিল অথচ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পরবর্তীকালে এই বিষয়ে বিশদ আলোচনা করা হবে।  

হৃদপিণ্ডের প্রাচীর

হৃদপিণ্ডের প্রাচীর ত্রিস্তরবিশিষ্ট হয়। এর বাইরের স্তরটিকে এপিকার্ডিয়াম (epicardium), মধ্যস্তরটিকে মায়ােকার্ডিয়াম (myocardium) এবং ভিতরে স্তরটিকে এন্ডোকার্ডিয়াম (endocardium) বলে।

  • এপিকার্ডিয়াম (Epicardium) : এটি প্রকৃতপক্ষে সেরাস পেরিকার্ডিয়ামের ভিসেরাল বা অন্তঃস্তর।
  • মায়ােকার্ডিয়াম (Myocardium) : এটি হৃৎপিণ্ডের প্রাচীরের মধ্যস্তর। এই স্তরটি সর্বাপেক্ষা পুরু এবং হৃদপেশি দ্বারা গঠিত। এই স্তরটি হৃদপিণ্ডের সংকোচক অংশ। হৃৎপিণ্ডের প্রাচীরের বিভিন্ন স্থানে হৃদপেশির স্থূলতার তারতম্য দেখা যায়। অলিন্দে মায়ােকার্ডিয়ামের স্থূলতা নিলয়ের চেয়ে কম।
  • এন্ডোকার্ডিয়াম (Endocardium) : এটি প্রাচীরের ভিতরের স্তর যা মসৃণ এবং অপেক্ষাকৃত পাতলা। এই স্তরটি এন্ডােথেলিয়াম কলা দ্বারা গঠিত। এটি হৃৎপিণ্ডের গহ্বরকে আবৃত করে, হৃদ-কপাটিকা (Heart valves) তৈরি করে এবং রক্তের সরাসরি সংস্পর্শে আসে।

আরও দেখে নাও : মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গের আবরণীর নাম

হৃৎপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ

মানুষের তথা স্তন্যপায়ী প্রাণীর, পক্ষীর, এবং কুমিরের সংবহনতন্ত্র দ্বিচক্রী। 

  • ফুসফুসীয় চক্রঃ Pulmonary Circulation → এই চক্রে অক্সিজেন বিরল রক্ত হৃৎপিণ্ডের ডান নিলয় থেকে ফুসফুসে এবং অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত ফুসফুস থেকে হৃৎপিণ্ডের বাম অলিন্দে প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ

হৃৎপিণ্ড → ফুসফুস → হৃৎপিণ্ড

  • দৈহিক চক্রঃ Systemic Circulation → এই চক্রে অক্সিজেন বিরল রক্ত সমগ্র দেহ থেকে হৃৎপিণ্ডের ডান অলিন্দে এবং অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত হৃৎপিণ্ডের বাম নিলয় থেকে সমগ্র দেহে প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ

দেহ → হৃৎপিণ্ড → দেহ

সরীসৃপ এবং উভচরের সংবহনতন্ত্র অসম্পূর্ণ দ্বিচক্রী – কারণ এখানে অক্সিজেন সমৃদ্ধ এবং অক্সিজেন বিরল রক্তের আংশিক মিশ্রণ হয়, তথা দৈহিক (Systemic) এবং ফুসফুসীয় (Pulmonary) সংবহন আলাদা চক্রের মাধ্যমে হয় না। 

মাছের সংবহনতন্ত্র একচক্রী। নিম্নের চিত্রটিতে মাছের হৃৎপিণ্ড দেখানো হল।

হৃৎপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ

হৃৎপিণ্ডের কপাটিকাসমূহ

হৃৎপিণ্ডে সর্বদা রক্ত একই অভিমুখে প্রবাহিত হয়। এই একমুখী প্রবাহ বজায় রাখার জন্য হৃৎপিণ্ডে অনেকগুলি কপাটিকা থাকে। কপাটিকা পেশীবহুল। 

কপাটিকার ত্রুটি বিপজ্জনক, এবং দ্রুত চিকিৎসার অভাবে কপাটিকার ত্রুটি সংবহনতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে জীবনসংশয় ঘটাতে পারে।

  • ত্রিপত্র কপাটিকাঃ Tricuspid valve → ডান অলিন্দ এবং ডান নিলয়ের মধ্যে থাকে। এটি ডান অলিন্দ থেকে ডান নিলয়ে রক্ত প্রবাহিত হতে দেয়, কিন্তু ডান নিলয় থেকে ডান অলিন্দে রক্ত প্রবাহ প্রতিহত করে। 
  • দ্বিপত্র কপাটিকাঃ Mitral valve → বাম অলিন্দ এবং বাম নিলয়ের মধ্যে থাকে। এটি বাম অলিন্দ থেকে বাম নিলয়ে রক্ত প্রবাহিত হতে দেয়, কিন্তু বাম নিলয় থেকে বাম অলিন্দে রক্ত প্রবাহ প্রতিহত করে। 
  • অর্ধচন্দ্রাকার কপাটিকাঃ Pulmonary valve → ডান নিলয় এবং ফুসফুসীয় মহাধমনীর মধ্যে থাকে। এটি ডান নিলয় থেকে ফুসফুসীয় মহাধমনীতে রক্ত প্রবাহিত হতে দেয়, কিন্তু ফুসফুসীয় মহাধমনী থেকে ডান নিলয়ে রক্ত প্রবাহ প্রতিহত করে। 
  • অর্ধচন্দ্রাকার কপাটিকাঃ Aortic valve → বাম নিলয় এবং মহাধমনীর মধ্যে থাকে। এটি বাম নিলয় থেকে মহাধমনীতে রক্ত প্রবাহিত হতে দেয়, কিন্তু মহাধমনী থেকে বাম নিলয়ে রক্ত প্রবাহ প্রতিহত করে। 

হৃদপিণ্ডের কপাটিকাগুলির অবস্থান –

কপাটিকাঅবস্থান
ত্রিপত্র কপাটিকাডান অলিন্দ – ডান নিলয়
দ্বিপত্র কপাটিকাবাম অলিন্দ – বাম নিলয়
পালমোনারি কপাটিকাডান নিলয় এবং ফুস্ফুসীয় মহাধমনী
অ্যাওর্টিক কপাটিকাবাম নিলয় ও মহাধমনী
থিবেসিয়ান কপাটিকাকরোনারি সাইনাস ও ডান অলিন্দ
ইউচেস্টিয়ান কপাটিকানিম্ন মহাশিরা ও ডান অলিন্দ
বিভিন্ন কপাটিকার অবস্থান

মানুষের হৃৎপিণ্ডের কপাটিকাগুলির একটি চিত্র নীচে দেওয়া হল –

হৃৎপিণ্ডের কপাটিকাসমূহ

হৃৎপিণ্ডের বিভাজিকা

মানবদেহের হৃৎপিণ্ডের প্রকোষ্ঠগুলি বিভাজিকার দ্বারা একে অপরের থেকে বিভক্ত থাকে।

ডান ও বাম অলিন্দের মধ্যে → আন্তঃ-অলিন্দ পর্দা

ডান ও বাম নিলয়ের মধ্যে → আন্তঃ-নিলয় পর্দা

করোনারী সংবহন

আমরা দেখলাম যে হৃৎপিণ্ড সমগ্র দেহে রক্ত সংবহনের কার্য সম্পন্ন করে থাকে। স্বাভাবিকভাবেই হৃৎপিণ্ডের নিজেরও রক্তের প্রয়োজন হয়। হৃৎপিণ্ডের রক্ত সংবহন করোনারী সংবহন দ্বারা সম্পন্ন হয়।

বাম ও ডান করোনারী ধমনী ঊর্ধ্বগামী মহাধমনী (ascending aorta) থেকে বের হয়ে সমগ্র হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত সরবরাহ করে। 

অন্যদিকে, সমগ্র হৃৎপিণ্ড থেকে অক্সিজেন বিরল রক্ত করোনারী শিরাসমূহের (বাম করোনারী শিরা, মধ্যবর্তী করোনারী শিরা, ডান করোনারী শিরা, থিবেসিয়ান শিরা) মাধ্যমে প্রথমে করোনারী সাইনাসে, এবং তারপরে করোনারী সাইনাস থেকে ডান অলিন্দে এসে পৌঁছয়। 

পশ্চাদ্‌বর্তী করোনারী শিরা করোনারী সাইনাসে না গিয়ে সরাসরি ডান অলিন্দে মিলিত হয়।

করোনারী সংবহন

করোনারী ধমনীতে বাধা বা ব্লক সৃষ্টি হলে তা হৃৎপিণ্ডের রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত করে। এর ফলে হৃৎপেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীকালে এর থেকে হৃদ্‌রোগ (myocardial infarction বা heart attack) হওয়া অস্বাভাবিক না। 

হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন

হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন ভেগাস স্নায়ু এবং পরাসমব্যাথী স্নায়ু (parasympathetic nerve) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। 

হৃৎপিণ্ডে স্পন্দন সৃষ্টিকারী বিশেষ কলা থাকে, এদের পেসমেকার বলে। এগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হল –

  • সাইনু-অরিকুলার বা সাইনু-অ্যাট্রিয়াল নোড (SA node)
    • এটি হৃৎপিণ্ডের প্রধান পেসমেকার 
    • অবস্থানঃ ডান অলিন্দের দেওয়ালে, ঊর্ধ্ব মহাশিরার পাশে
    • স্পন্দনঃ মিনিটে ৭২ বার 
  • অ্যাট্রিও-ভেন্ট্রিকুলার নোড (AV node)
    • এটি উপপ্রধান পেসমেকার 
    • SA node কোনো কারণে সঠিক স্পন্দন সৃষ্টি না করতে পারলে AV node স্পন্দন সৃষ্টি করে
    • অবস্থানঃ বাম অলিন্দ এবং ডান নিলয়ের মাঝে, আন্তঃ-অলিন্দ পর্দার কাছে
    • স্পন্দনঃ মিনিটে ৪০-৬০ বার 
  • হিজের বান্ডিল (Bundle of His) এবং পারকিনজি তন্তু
    • SA node এবং AV node সঠিকভাবে স্পন্দিত না হলে হিজের বান্ডিল এবং পারকিনজি তন্তু স্পন্দন সৃষ্টি তথা পরিবহন করে 
    • এগুলি প্রকৃতপক্ষে বিশেষ হৃৎপেশী যা বৈদ্যুতিক পরিবহনে সক্ষম
    • অবস্থানঃ আন্তঃ-নিলয় পর্দা এবং নিলয়ের দেওয়াল
    • স্পন্দনঃ মিনিটে ৩০-৪০ বার 
 হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন

স্বাভাবিক পেসমেকার অকেজো হয়ে গেলে কৃত্রিম পেসমেকার বসানো হয়ে থাকে। 

Download Section

  • File Name : হৃৎপিণ্ডের গঠন ও কার্যপ্রণালী । Heart _ Anatomy and Function – বাংলা কুইজ
  • File Size: 7 MB
  • No. of Pages: 09
  • Format: PDF
  • Language: Bengali
  • Subject: Biology

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

কুদ্দুস ভাই

World History, Content Writer @ www.banglaquiz.in

Related Articles

Back to top button