Geography NotesGeneral Knowledge Notes in Bengali

কয়লা ও তার শ্রেণীবিভাগ – বিভিন্ন ধরণের কয়লা – PDF

Different types of Coal and their Carbon Content

কয়লা ও তার শ্রেণীবিভাগ – বিভিন্ন ধরণের কয়লা

প্রিয় পাঠকেরা,  আজকে আমরা আলোচনা করবো কয়লা ও তার শ্রেণীবিভাগ  (বিভিন্ন ধরণের কয়লা ) নিয়ে। কোন কয়লার কার্বনের পরিমান কত এবং কোন কোন ধরণের কয়লা রয়েছে, কোন কয়লা ভারতের কোথায় পাওয়া যায় – এই সমস্ত টপিক থেকে মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলিতে প্রশ্ন এসেই থাকে। আজকের এই টপিকটিতে আমরা তাই এই ধরণের সমস্ত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।

ভূবিজ্ঞানীরা অনুমান করেন যে প্রায় ৩০ কোটি বছর আগে কার্বোনিফেরাস উপযুগে প্রবল ভূ-আন্দোলনের ফলে উদ্ভিদমন্ডলী মাটির তলায় চাপা পরে যায়। কালক্রমে হাজার-হাজার বছর ধরে অভ্যন্তরীণ তাপ, চাপ ও রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে উদ্ভিদের অঙ্গার স্তরীভূত হয়ে পাললিক শিলা কয়লার সৃষ্টি হয়।

কয়লা ভারতের অন্যতম খনিজ সম্পদ। ভারতে মধ্যম শ্রেণীর বিটুমিনাস কয়লা সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়

ভারতে কয়লার ব্যবহার :

তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পের জ্বনালীরূপে ভারতে অধিকাংশ কয়লা ব্যবহৃত হয়।

  • লোহা ও ইস্পাত শিল্পে শক্ত কোক কয়লার ব্যবহার ছাড়াও গৃহস্থালির জ্বালানির প্রয়োজনে নরম কোক কয়লা ব্যবহার করা হয়।
  • রেল পরিবহনের জন্য কয়লা ব্যবহার করা হয়। যদিও বর্তমানে রেলে কয়লার ব্যবহার বহুল পরিমানে কমে গিয়েছে।
  • সাধারণ জ্বালানি হিসেবে কয়লার ব্যবহার হয়।
  • বিভিন্ন কলকারখানায় ও কয়লা গ্যাস উৎপাদনের জন্য কয়লা ব্যবহার করা হয়।
  • রাসায়নিক ও সার শিল্পে কাঁচামাল হিসাবে এবং উত্তর ভারতে শীতপ্রধান অঞ্চলে ঘর গরম রাখতে কয়লা ব্যবহার করা হয়।

কয়লার বহুল ব্যবহারের জন্য কয়লাকে “কালো হীরে” বলা হয়ে থাকে।

কয়লার বিভিন্ন উপজাত :

কয়লা থেকে কোক উৎপাদনের সময় নানাবিধ উপজাত দ্রব্য পাওয়া যায়। প্রধানত উচ্চচাপযুক্ত অঙ্গারীকরণ, নিম্নতাপযুক্ত অঙ্গারীকরণ ও উদযানীভবন প্রণালীতে কয়লা থেকে বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য প্রস্তুত করা হয়। এগুলি হলো – কোক, কয়লা গ্যাস, ক্রিয়জোট, ন্যাপথালিন, আন্থ্রাসিন, কোল টার, এমোনিয়া, বেঞ্জল, ফেনল ও গন্ধক প্রভৃতি।

এই সমস্ত দ্রব্য হতে প্লাস্টিক, সাবান, জীবাণু-নিরোধক দ্রব্য, বিষ প্রতিরোধক, আঠা, রং, স্যাকারিন, সুগন্ধি দ্রব্য, ওষুধ প্রভৃতি তৈরী করা হয়।

এমোনিয়াম সালফেট থেকে সার, হিমায়িত করার দ্রব্য, পরজীবীনাশক ওষুধ প্রভৃতি তৈরী করা হয়। কয়লা থেকে কৃত্রিম তেল, গ্যাস, ডিজেল প্রভৃতিও তৈরী করা হয়। অঙ্গারীকরণের পর যে অবশিষ্ট ছাই-ভস্ম পড়ে থাকে তার সাহায্যে সিমেন্ট প্রস্তুত করা হয়।

কয়লার শ্রেণীবিভাগ :

কয়লার অঙ্গার বা কার্বনের পরিমানের তারতম্যের ভিত্তিতে কয়লাকে প্রধানত চারভাগে ভাগ করা হয়। এগুলি হলো –

  • পিট কয়লা
  • লিগনাইট কয়লা
  • বিটুমিনাস কয়লা
  • অ্যান্থ্রাসাইট কয়লা

পিট কয়লা :

বৈশিষ্ট্য :

  • প্রাথমিক পর্যায়ের কয়লা।
  • জলাভূমি অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়।
  • জলীয় বাষ্পের পরিমান বেশি।
  • ভারতে কম পাওয়া যায়

রঙ :  উদ্ভিদের আঁশযুক্ত বাদামী বর্ণের।

কার্বনের পরিমান : ৩০% এর কম।

তাপ উৎপাদন ক্ষমতা : অত্যন্ত কম। পোড়ালে প্রচুর ধোঁয়া নির্গত হয়।

উদ্বায়ী দ্রব্য : ২০-৩০%

ব্যবহার : ব্যবহার প্রায় নেই। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

বন্টন : আসাম, দার্জিলিং, রঙ্গীত উপত্যকা, জম্মু ও কাশ্মীর।

লিগনাইট কয়লা :

বৈশিষ্ট্য :

  • অপেক্ষাকৃত উন্নতমানের কয়লা।
  • জলীয় বাষ্পের পরিমান অপেক্ষাকৃত কম।
  • ভারতে খুব কম পাওয়া যায়।

রঙ :  বাদামী বর্ণের।

কার্বনের পরিমান : ৩০-৫০% ।

তাপ উৎপাদন ক্ষমতা : পিট্ কয়লার তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি। পোড়ালে প্রচুর ধোঁয়া নির্গত হয়।

উদ্বায়ী দ্রব্য : ১৫-২০%

ব্যবহার : পেট্রল, গ্যাস ও তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়।

বন্টন : নেভেলী, পন্ডিচেরী, কচ্ছ , পালানা, আলেপ্পি, মেঘালয় অঞ্চল।

বিটুমিনাস কয়লা :

বৈশিষ্ট্য :

  • প্রচন্ড চাপে এরূপ কয়লার সৃষ্টি হয়।
  • উন্নত মানের কয়লা।
  • ভারতের এই ধরণের কয়লা সবচেয়ে বেশি পরিমানে পাওয়া যায়।

রঙ :  কালো রঙের।

কার্বনের পরিমান : ৫০-৮৫% ।

তাপ উৎপাদন ক্ষমতা : অত্যন্ত বেশি।

উদ্বায়ী দ্রব্য : ৪০-৪৫%

ব্যবহার : এই ধরণের কয়লার ব্যবহার সর্বাধিক। জ্বালানী, কোক, গ্যাস, তাপবিদ্যুৎ ও বিভিন্ন উপজাত দ্রব্য প্রস্তুতিতে এর ব্যবহার করা হয়।

বন্টন : দামোদর উপত্যকা অঞ্চল, শোন-মহানদী-ব্রাহ্মণী অঞ্চল, সাতপুরা অঞ্চল, ওয়ার্ধা-গোদাবরী-ইন্দ্রাবতী উপত্যকা অঞ্চল।

অ্যান্থ্রাসাইট কয়লা :

বৈশিষ্ট্য :

  • অত্যন্ত শক্ত ও খুব উন্নতমানের কয়লা।
  • জলীয় বাষ্পের পরিমান খুব কম।
  • ভারতে এই ধরণের কয়লা সেরকম পাওয়া যায় না।

রঙ :  উজ্জ্বল কালো রঙের।

কার্বনের পরিমান : ৮০-৯৫% ।

তাপ উৎপাদন ক্ষমতা : অত্যন্ত বেশি। সহজে জ্বালানো যায় না, তবে একবার জ্বালালে প্রচুর তাপ পাওয়া যায়।

উদ্বায়ী দ্রব্য : ৩-৫%

ব্যবহার : কঠিন শিলায় পাওয়া যায় বলে এর ব্যবহার ও উত্তোলন কম। কোক, তাপবিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদনে ব্যবহার করা হয়।

বন্টন : জম্মু ও কাশ্মীর উপত্যকার খুব অল্প পরিমানে পাওয়া যায়।

নিচের ডাউনলোড লিংক থেকে এই নোটটির PDF ফাইল ডাউনলোড করে নাও ।

Download Section :

File Name : কয়লা ও তার শ্রেণীবিভাগ – বিভিন্ন ধরণের কয়লা – PDF – বাংলা কুইজ
File Size : 2.8 MB
Format : PDF
No. of Pages : 05

আরও দেখে নাও :

১. কয়লা কি ধরণের খনিজ সম্পদ ?

অধাতব খনিজ সম্পদ

২. ভারতে কি ধরনের কয়লা বেশি পাওয়া যায় ?

বিটুমিনাস কয়লা

৩. ভারতের কোন অঞ্চলে সর্বাধিক কয়লা উত্তোলিত হয় ?

দামোদর উপত্যকা অঞ্চলে

৪. লিগনাইট কয়লা ভারতের কোথায় সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ?

তামিলনাড়ুর নেভেলী-তে

৫. কোন ধরনের কয়লার তাপন মূল্য সবচেয়ে বেশি ?

অ্যানথ্র্যাসাইট 

৬. কয়লা উৎপাদনে বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে ভারতের স্থান কত ?

দ্বিতীয় ( চীনের পরে )

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Related Articles

দেখে নাও
Close
Back to top button