General Knowledge Notes in BengaliGeography Notes

পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সামগ্ৰী তালিকা – PDF

List of Geographical Indications (GI) Tags of West Bengal

পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সামগ্ৰী

প্রিয় পাঠকেরা, আজকে আমরা আলোচনা করবো পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সামগ্রী নিয়ে। তার আগে একটু ভৌগোলিক স্বীকৃতি বা ভৌগোলিক সূচক বা GI ট্যাগ কি একটু জেনে নিয়। পশ্চিমবঙ্গের জি আই ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্য তালিকা

ভৌগোলিক স্বীকৃতি কি ? / Gi পণ্য কি?

ভৌগোলিক স্বীকৃতি (Geographical indication সংক্ষেপে GI জি আই) হচ্ছে কোনো সামগ্ৰীর ব্যবহার করা বিশেষ নাম বা চিহ্ন। এই নাম বা চিহ্ন নিৰ্দিষ্ট সামগ্ৰীর ভৌগোলিক অবস্থিতি বা উৎস (যেমন একটি দেশ, অঞ্চল বা শহর) অনুসারে নিৰ্ধারণ করা হয়। ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সামগ্ৰী নিৰ্দিষ্ট গুণগত মানদণ্ড বা নিৰ্দিষ্ট প্ৰস্তুত প্ৰণালী অথবা বিশেষত্ব নিশ্চিত করে।

ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিভিন্ন সামগ্ৰী নিৰ্দিষ্ট অঞ্চলটিতে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করার অধিকার এবং আইনি সুরক্ষা প্ৰদান করে।

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সামগ্ৰীর তালিকা

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জিআই তকমা প্রাপ্ত সামগ্রীর টাকিলা নিচে দেওয়া রইলো।

পণ্যঅতিরিক্ত তথ্য
দার্জিলিং চাপশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের প্রথম GI তকমাপ্রাপ্ত পণ্য। ২০০৪-০৫ সালে ভৌগোলিক স্বীকৃতি লাভ করে। দার্জিলিং পাহাড়ের মনোরম পরিবেশে ক্যামেলিয়ার কোমল কুঁড়ি দিয়ে উৎপাদিত হয় বিশ্ববিখ্যাত দার্জিলিং-চা।
নকশি কাঁথা২০০৮ সালে ভৌগোলিক স্বীকতিটিপায় । নকশি কাঁথা হলো সাধারণ কাঁথার উপর নানা ধরনের নকশা করে বানানো বিশেষ প্রকারের কাঁথা।
শান্তিনিকেতনী চর্মজাত সামগ্রীপশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার শান্তিনিকেতনে এই হস্তশিল্প প্রখ্যাত। শান্তিনিকেতনে উৎপাদিত সামগ্রীর একটি অসাধারন বৈশিষ্ট্য হল এদের অলংকরনে ১৯২০ খ্রীষ্টাব্দে পূর্বদেশীয় জাভা এবং বালি থেকে আমদানিকৃত বাটিক নক্সা ব্যবহৃত হয়।
তুলাইপাঞ্জি চালপ্রধানত উত্তর দিনাজপুরের রাজগঞ্জে এই চালের চাষ করা হয়। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই চালকে লন্ডন অলিম্পিকে ফুড ফেস্টিভ্যালে পাঠিয়েছিলো। ভৌগোলিক স্বীকৃতি পায় ২০১৭ সালে ।
গোবিন্দভোগ চালপ্রধানত হুগলি, নদীয়া, বীরভূমে চাষ করা হয়। গোবিন্দ বা কৃষ্ণের ভোগ রান্নার জন্য এই চাল ব্যবহার করা হয় বলে এই চালের নাম গোবিন্দভোগ চাল। এই চাল ছোটো দানার এবং চটচটে ও ঘিয়ের ঘন্ধ যুক্ত। ২০১১ সালে ভৌগোলিক স্বীকৃতি পায়।
লক্ষ্মণভোগ আমএই আম প্রধানত পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায় চাষ করা হয়।
ফজলি আমএই আম প্রধানত পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায় চাষ করা হয়।
হিমসাগরএই আম প্রধানত পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায় চাষ করা হয়।
শান্তিপুরী শাড়ি শান্তিপুরী শাড়ি একপ্রকারের সূক্ষ্ম সূতোর বিশেষ ধরনের হাতে বোনা শাড়ি যা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলায় শান্তিপুরে  তৈরী হয়।
বালুচরী শাড়ি বালুচরীর জন্ম মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জের নিকটবর্তী অধুনালুপ্ত বালুচর নামক স্থানে।
ধনেখালি শাড়ি হুগলি জেলার ধনেখালি অঞ্চলে এই শাড়ি প্রথম তৈরি হয়
পটচিত্র বাংলার পটচিত্র পট বা বস্ত্রের উপর আঁকা একপ্রকার লোকচিত্র। এটি প্রাচীন বাংলার (বাংলা ভাষাভাষী অধ্যুষিত অঞ্চল) অন্যতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
সীতাভোগ সীতাভোগ বাংলার এক সুপ্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন। এটা অনেকটা বাসমতী চালের ভাতের মত দেখতে হয়। বর্ধমানের সীতাভোগ অতি বিখ্যাত।
মিহিদানা ১৯০৪ সালে বড়লাট জর্জ ন্যাথানিয়েল কার্জন বর্ধমানের জমিদার বিজয়চাঁদ মহতাবকে মহারাজা খেতাব দিতে বর্ধমান ভ্রমণ করেন। কার্জনের বর্ধমান আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে বিজয়চাঁদ মহতাব বর্ধমানের জনৈক মিষ্টি প্রস্তুতকারক ভৈরবচন্দ্র নাগকে একটি বিশেষ মিষ্টি প্রস্তুত করতে বলেন। ভৈরবচন্দ্র নাগ মিহিদানা ও বর্ধমানের অপর বিখ্যাত মিষ্টান্ন সীতাভোগ তৈরী করেন।
রসগোল্লা২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রসগোল্লার জিআই ট্যাগ লাভ করে। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার ফুলিয়ার হারাধন ময়রা আদি রসগোল্লার সৃষ্টিকর্তা । কলকাতার নবীনচন্দ্র দাস আধুনিক স্পঞ্জ রসোগোল্লার আবিষ্কর্তা ছিলেন এবং তিনি ইতিহাসে জনপ্রিয় কণ্ঠে রসগোল্লার কলম্বাসের সাথে যুক্ত হয়েছেন
জয়নগরের মোয়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার বহড়ু ও জয়নগর অঞ্চল এই মিষ্টান্নটির জন্য বিখ্যাত। জয়নগর অঞ্চলের পূর্ণচন্দ্র ঘোষ ওরফে বুঁচকিবাবু এবং নিত্যগোপাল সরকারকে জয়নগরের মোয়ার বাণিজ্যিক বিপণনের পথিকৃৎ বলে ধরা হয়।
মাদুরকাঠিমাদুরকাঠি মেদিনীপুর জেলার জি আই ট্যাগ প্রাপ্ত একটি কুটিরশিল্প জাত পণ্য। নরম মাদুরকাঠি দিয়ে মাদুর তৈরি করা হয়।
ছৌ মুখোশ ছৌ মুখোশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুরুলিয়া জেলার একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য৷ পুরুলিয়াতে প্রচলিত ছৌ এবং ওড়িশার ময়ুরভঞ্জের ছৌ এর মুল পার্থক্য হলো মুখোশ ও পোষাকাদির ব্যবহার৷ আবার ঝাড়খণ্ডের সরাইকেল্লার ছৌ তে মুখোশ থাকলেও অলঙ্করণ কম ও নির্দিষ্ট বস্ত্রের ব্যবহার নেই৷ পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডির রাজা মদনমোহন সিংহ দেবের সময় থেকে ছৌ মুখোশ বানানোর ঐতিহ্য চলে আসছে
ডোকরা ডোকরা হল “হারানো মোম ঢালাই” পদ্ধতিতে তৈরি একটি শিল্প কর্ম। এই শিল্পের ইতিহাস প্রায় ৪০০০ হাজার বছরের পূরানো। সিন্ধু সভ্যতার শহর মহেঞ্জদোড়োতে প্রাপ্ত “ড্যান্সসিং গার্ল” বা “নৃত্যরত নারী মূর্তি” হল ডোকরা শিল্পের নিদর্শন। মনে করা হয় মধ্যপ্রদেশ এর বাস্তর ও ছত্তিসগড়ে এই শিল্পের উদ্ভব হয়। পরে ঝাড়খণ্ড ও বিহার-এ ছড়িয়ে পড়ে। আরও পরে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা রাজ্যে এর প্রসার ঘটে। বর্তমানে ডোকরা শিল্পে পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম নাম।
মনসা চালি মনসা চালি বা মনসা বারি দেবী মনসার এক অনন্য মাটির প্রতিমা, যা পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার পাঁচমুড়া অঞ্চলের পোড়ামাটির শিল্পকলার তথা পশ্চিমবঙ্গের শিল্পকলার নিদর্শন। বাঁকুড়া পাঁচমুড়া পোড়ামাটির শিল্প রূপে মনসা চালি ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
বাঁকুড়ার ঘোড়া বাঁকুড়ার ঘোড়া এক ধরনের পোড়ামাটির ঘোড়া। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার পাঁচমুড়া গ্রামে এই বিশেষ শিল্পদ্রব্যটি তৈরি হয়। ২০১৮ সালে ভৌগোলিক স্বীকৃতি পায়।

আরও দেখে নাও :

পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় উদ্যান | National Parks of West Bengal

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভূগোলের ৫০০ টি MCQ প্রশ্ন ও উত্তর –  PDF ডাউনলোড

পশ্চিমবঙ্গের উচ্চতম, বৃহত্তম, দীর্ঘতম, ব্যস্ততম

পশ্চিমবঙ্গের ভূগোল প্রশ্ন ও উত্তর – পার্ট ২ | একনজরে পশ্চিমবঙ্গ

প্রশ্ন ও উত্তর

পশ্চিমবঙ্গের জি আই ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্য তালিকা ?

দার্জিলিং চা ভারতের প্রথম জি আই ট্যাগ প্রাপ্ত পণ্য ।

পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলার ছৌ মুখোশ জি আই ট্যাগ পেয়েছে ?

পুরুলিয়া

বালুচুরি শাড়ির জন্ম কোথায় ?

বালুচুড়ি শাড়ির জন্ম পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জে।

নিচের ডাউনলোড সেকশন থেকে এই নোটটির পিডিএফ ডাউনলোড করে নাও ।


Download Section

  • File Name: পশ্চিমবঙ্গের ভৌগোলিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সামগ্ৰী তালিকা – PDF – বাংলা কুইজ
  • File Size: 2 MB
  • No. of Pages: 03
  • Format: PDF
  • Language: Bengali

To check our latest Posts - Click Here

Telegram

Related Articles

Back to top button